অধিকাংশ নামাজী ওজু গোসলের সময় পানি অপচয়ের হারামে জড়িত।আল্লাহর ভাষায় তারা হলো ইখওয়ানুশ শাইয়াত্বীন বা শয়তানের ভাই।আর ওয়াসওয়াসার রোগীদের তো কথাই নেই,এক অঙ্গ বার বার ধৌত করতে থাকে।আল্লাহ তাআলা সকলকে ক্ষমা করুন।
এবার শোনেন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর অভ্যাস কী ছিলো:
আনাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সা‘ (৪ মুদ) হতে পাঁচ মুদ পর্যন্ত পানি দিয়ে গোসল করতেন এবং উযু করতেন এক মুদ দিয়ে। (মুসলিম ৩/১০, হাঃ ৩২৫, আহমাদ ১৪০০২, ১৪০৯৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২০১)
بَاب الْوُضُوءِ بِالْمُدِّ حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ، قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ جَبْرٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا، يَقُولُ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَغْسِلُ ـ أَوْ كَانَ يَغْتَسِلُ ـ بِالصَّاعِ إِلَى خَمْسَةِ أَمْدَادٍ، وَيَتَوَضَّأُ بِالْمُدِّ.
নোট: ১ মুদ = ৬০০ গ্রাম, চার মুদ = ১ সা‘ অর্থাৎ প্রায় আড়াই কেজির পাত্র বিশেষ। তবে শস্যের তারতম্যের কারণে ওজনের তারতম্য ঘটে।
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৪/ উযূ (كتاب الوضوء)
হাদিস নম্বরঃ ২০১
অনেকে অজুর অঙ্গ সমূহ তিনবারের বেশী ধোয়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ﷺ যা বলেছেন:
১৪০। মাহমূদ ইবন গায়লান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একজন বেদুঈন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট এসে তাকে উযু সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে অযুর অঙ্গ তিন-তিনবার ধৌত করে দেখালেন। আর বললেন- এরুপেই করতে হয়। যে ব্যক্তি এর উপর বাড়ালো সে অন্যায় করল, সীমালঙ্ঘন ও যুলূম করল।
أَخْبَرَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، قَالَ حَدَّثَنَا يَعْلَى، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُهُ عَنِ الْوُضُوءِ فَأَرَاهُ الْوُضُوءَ ثَلاَثًا ثَلاَثًا ثُمَّ قَالَ " هَكَذَا الْوُضُوءُ فَمَنْ زَادَ عَلَى هَذَا فَقَدْ أَسَاءَ وَتَعَدَّى وَظَلَمَ "
হাসান সহীহ। ইবনু মাজাহ হাঃ ৪২২
গ্রন্থঃ সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১/ পবিত্রতা (كتاب الطهارة)
হাদিস নম্বরঃ ১৪০
পানি অপচয় সম্পর্কে আরেকটি হাদিস
وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ مَرَّ بِسَعْدٍ وَهُوَ يَتَوَضَّأُ فَقَالَ مَا هذَا السَّرَفُ يَا سَعْدُ قَالَ أَفِي الْوُضُوءِ سَرَفٌ؟ قَالَ نَعَمْ وَإِنْ كُنْتَ عَلى نَهْرٍ جَارٍ. رَوَاهُ أَحْمَدُ وابن مَاجَةَ
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সা’দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস-এর কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় সা’দ (রাঃ) উযূ করছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে সা’দ! এত অপচয় কেন? সা’দ আবেদন করলেন, হে আল্লাহর রসূল! উযূর মধ্যেও কি অপচয় আছে? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হাঁ আছে। যদিও তুমি প্রবহমান নদীর কিনারায় থাক। [১]
ফুটনোটঃ
[১] হাসান : আহমাদ ২/২২১, ইবনু মাজাহ্ ৪২৫, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ৩২৯৩।
মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ৪২৭
হাদিসের মান: হাসান হাদিস
অপচয় সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ ۖ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا
অনুবাদঃ নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।
(সূরাঃ বনী ইসরাঈল, আয়াতঃ ২৭)
يَا بَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ
বাংলা অনুবাদঃ হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।
(সূরাঃ আল আ'রাফ, আয়াতঃ ৩১)
সুতরাং কেউ যদি ওয়াসওয়াসার রোগী বা শয়তানের ভাই না হতে চায় তাহলে সে যেনো অবশ্যই রাসূলুল্লাহ ﷺ কে অনুসরণ করে পরিমিত পানি ব্যবহার করে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন। আমিন।
No comments:
Post a Comment