ক্যান্সারে আক্রান্ত মা মারা যাওয়ার আগে প্রতি মাসে ওনার চিকিৎসার পেছনে ২০/২৫ হাজার টাকা খরচ হতো। টাকাগুলো ভাই বোন মিলে শেয়ার করতাম।
মা মারা যাওয়ার পরে দেখা গেল সেই টাকা সেভিংস হচ্ছে না। অথচ পরিবারের এক্সট্রা কোন খরচ নাই। পরে খেয়াল করলাম আমাদের ইনকামই কমে গেল। অর্থাৎ মা ওনার রিযিক নিয়ে চলে গেছেন।
গত আগস্টের প্রথম দিকে আমার মারা গেলেন। আগস্ট, সেপ্টেম্বর অক্টোবর মোট ৩ মাস আমার বলতে গেলে কোন ইনকাম ছিল না।
৩ মাস পরে নড়েচড়ে বসলাম। আমি আগে এমন কী করতাম যাতে আমার ইনকাম ভালো ছিল আর এখন কী করি যার ফলে ইনকাম নেই!
খেয়াল করে দেখলাম আমি দান করা প্রায়ই বন্ধ করে দিয়েছি। মূলত মায়ের শেষ দিকের চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাওয়ায় (শেষ ৩ দিনে হাসপাতাল বিলই ছিল ৭০ হাজার টাকা সহ দাফন মিলিয়ে লাখ টাকা চলে গেছিল) সেই ঋণ শোধ করতে গিয়ে কীভাবে যেন দান সদকা করা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
অক্টোবর থেকে আমি আবার দান খয়রাত করা শুরু করলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আমার টানাটানি দূর হতে লাগল। ডিসেম্বর জানুয়ারিতে পকেটে এমন পরিমান টাকা আসল যে ৩ মাসের লস উঠে আসল। গত বছর মে মাসে বৌ গয়না বেচা ৭৫ হাজার টাকা আমাকে দিয়েছিল, সেটাও শোধ করলাম। একে একে পাওনাদার ইনভেস্টর সবাইকে ডেকে ডেকে বললাম টাকা লাগবে কিনা। যারা টাকা চেয়েছেন তাদেরকে টাকা ফেরত দিলাম। যারা চায়নি তাদেরকে শুধু লাভের অংশ দিলাম। বোনের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলাম বছরখানেক আগে, সেটাও ফেরত দিলাম।
আসলে মা মারা যাওয়ার সময় যখন ওনার রিযিক নিয়ে চলে গেছেন আমার তখনই উচিৎ ছিল সেই খরচটা কন্টিনিউ রাখা। আমার মা নেই তো কী হইছে, দুনিয়ায় প্রচুর বিপদগ্রস্ত মানুষ আছেন যাদের সাহায্য দরকার।
এখনো প্রতি মাসে মায়ের জন্য একটা বাজেট থাকে। খেয়াল করলাম যে মাসে বাজেট বেশি থাকে সেই মাসে ইনকাম বেশি থাকে। এই হিসাব কোন একাউন্ট অডিট ফার্ম মিলিয়ে দিতে পারবে না। এই হিসাব কোন অংক দিয়ে মিলানো যাবে না। এই হিসাব সাইন্স কমার্স সব কিছুর উর্ধে।
কী? করবেন এই ব্যবসা? বিফলে মূল্য ফেরত!
ফখরুল ইসলাম ভাই।
No comments:
Post a Comment