যে ওষুধের কথা ডাক্তার বলে না!
ইমাম আল-হাকিম আন-নিশাপূরী (রাহিমাহুল্লাহ) ছিলেন একজন বড়ো মুহাদ্দিস। একবার তাঁর মারাত্মক একটি অসুখ হয়েছিলো। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা করেও কোনো সুফল পাচ্ছিলেন না।
শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে একদিন ইমাম আবু উসমান আস-সাবুনীকে (রাহিমাহুল্লাহ) অনুরোধ করেন তাঁর জন্য জুমুয়ার দিন দু’আ করতে।
ইমাম আবু উসমান আস-সাবুনী (রাহিমাহুল্লাহ) জুমু’আর দিন ইমাম আল-হাকিমের (রাহিমাহুল্লাহ) জন্য দু’আ করেন। উপস্থিত মুসল্লিরা সবাই ‘আমিন-আমিন’ বলে।
পরের সপ্তাহে একজন মহিলা একটি চিঠি নিয়ে উপস্থিত হন। তিনি আগের সপ্তাহে ঐ দু’আয় উপস্থিত ছিলেন। তিনিও আল-হাকিমের (রাহিমাহুল্লাহ) জন্য দু’আ করেছিলেন।
ঐ রাতে তিনি স্বপ্নে রাসূলুল্লাহকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দেখেন! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বলেন,
“আল-হাকিমকে গিয়ে বলো, মুসলিমদের মধ্যে পানি সরবরাহ করতে।”
মহিলা স্বপ্নের কথা আল-হাকিমকে (রাহিমাহুল্লাহ) লিখে দেন। আল-হাকিম (রাহিমাহুল্লাহ) আর দেরী করলেন না। তিনি তৎক্ষণাৎ পানি সংগ্রহ করে মুসলিমদের মধ্যে ফ্রি-তে বিতরণ করেন।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এই ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যে
তিনি সুস্থ হয়ে উঠেন, তাঁর অসুখ একেবারেই কমে যায়!
কোন এমন ওষুধ আল-হাকিমের (রাহিমাহুল্লাহ) অসুখ কমালো? সেটা হলো- সাদকা।
শায়খ আলী জাবের আল-ফীফী (হাফিজাহুল্লাহ) তাঁর বিখ্যাত বই ‘লি আন্নাকাল্লাহ’ (বাংলায় যা ‘তিনিই আমার রব’ নামে অনূদিত) –তে একটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন।
তাঁর এক বন্ধুর গাড়ির নিচে এক ছেলে চাপা পড়ে। সে গাড়িটি থামিয়ে ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে ছেলেটির বাবা ও দাদা উপস্থিত হোন। ডাক্তাররা জানায়, ছেলেটির বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ২০%। তিনি মনে মনে বেশ ব্যথিত হোন এই ভেবে যে, তাঁর জন্য একটি ছেলে মারা যাবে!
তিনি তাঁর পরিচিত একজন শায়খকে ফোন করে জিজ্ঞেস করেন, এখন কী করা যায়? সেই শায়খ বলেন,
“ছেলেটির সুস্থতা কামনা করে একটি পশু কুরবানি দাও।”
তিনি তাই করলেন। সপ্তাহখানেক পর তিনি যখন ছেলেকে দেখতে যান, দেখতে পেলেন ছেলেটি সুস্থ হয়ে গেছে!
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:
“বিপদের সময় সাদকার প্রভাব এতো বেশি যে, সেটা কল্পনার বাইরে। এমনকি কোনো ফাসিক, যালিম কিংবা কাফিরকেও সাদকা করা হয়, সেটা থেকেও ফল পাওয়া যায়।”
ইমাম আন-নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
“যখন ওষুধ কোনো কাজ করতে পারে না, তখন সাদকা তার কার্যকারিতা শুরু করে দেয়। ওষুধ দ্বারা যে রোগের আরোগ্য হয় না, সাদকার মাধ্যমে অনেক সময় দেখা গেছে সেই রোগের আরোগ্য হয়। যাদের বুঝ আছে, তারা এই বিষয়টি অস্বীকার করেন না।”
©